আপনি সিনেমা দেখেন নাকি সিনেমা আপনাকে দেখায়?
আচ্ছা, সিনেমাকে কখনও প্রশ্ন করেছেন?
ভাবছেন এ কি শুরু করলাম! প্রথমেই অদ্ভুত এক শিরোনাম, তার উপরে সেই শিরোনাম ব্যাখ্যা না করেই প্রথম লাইনেই সিনেমাকে প্রশ্ন করেন কিনা সেটা নিয়ে আবার প্রশ্ন! অনেকে হয়ত ভাবছেন- সিনেমা কি অমিতাভ বচ্চন নাকি যে তার সাথে “কৌন বানেগা ক্রোড়পতি” টাইপ প্রশ্ন উত্তর খেলা খেলবো? রিলেক্স বৎস! চিন্তার কিছু নাই, সব ব্যাখ্যা করছি। আমি সাধারনত যেই ধরনের লেখা লিখি সিনেমা নিয়ে, বা যেই প্যাটার্নে সিনেমা নিয়ে লিখি (অনেকটাই শাহরুখ খানের মতো আবেগে ভেসে গিয়ে :p ) এটা সেই ধরনের লেখা না। চেষ্টা করেছি ভিন্ন কিছু একটা লেখার, সিনেমা কীভাবে আমাদের চিন্তাকে কিছুটা হলেও প্রভাবিত করে সেটা নিয়ে আলোচনা করার। আমার ক্ষুদ্র একটা অনুরোধ থাকবে- এই লেখাটা প্রয়োজনের চাইতে একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়ার। খুব বেশি না, একটু বেশি মনোযোগ। আর পড়া শেষে আপনার মন্তব্য যাই হোক না কেন- সেটা নিয়ে একটু চিন্তা করার।
খুব বেশি উপদেশ বা আদেশ দিয়ে ফেলছি? সর্বনাশ! আর দিব না, সরাসরি মূল বক্তব্যে চলে যাই।
১- হিন্দি সিনেমা দেখেছেন অথচ “থ্রি ইডিয়টস” দেখেন নাই, এমন ব্যক্তি মনে হয় খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। এমনকি সচরাচর যারা হিন্দি সিনেমা দেখেন না, তারাও এই সিনেমাটি দেখেছেন বা অন্তত নাম শুনেছেন। আচ্ছা, এই সিনেমার মূল বক্তব্য কি? যদি মোটা দাগে বলি- তাহলে সেটি হচ্ছে- নিজের যেটা ভাল্লাগে সেটা করা- সেটা ইঞ্জিনিয়ারিং হোক, বা ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি হোক। আরও মোটা দাগে বললে এই সিনেমার মূল বক্তব্য হল- নিজের সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেয়া। নিজের মন যেটা বলে সেটা শোনা। প্রশ্ন হচ্ছে- সিনেমার সবাই কি সেটা করেছিল? আলবৎ করেছিল- আপনি সেটাই বলবেন এখন। আমির খান তো নিজের মতই ছিল আর শেষ পর্যন্ত অনেক বাঁধা পেরিয়ে তার দুই বন্ধুও শেষ পর্যন্ত তাদের মনের সিদ্ধান্ত মতই কাজ করেছিল। কিন্তু কারিনা কাপুরের ব্যাপারটা? মনে আছে সেই দৃশ্যটা? কারিনার যখন বিয়ে হয়ে যাচ্ছে সবকিছুতে দাম বলা সেই “গাধাটার” সাথে, আর তখন শারমান জোশি আর মাধবন এসে তাকে বলে- তুমি আসলে র্যাঞ্চোকে পছন্দ কর, এই গাধাকে না! এই গাধার সাথে বিয়ে হলে একদিন তুমি আফসোস করবে- আমরা দুইজন এসেছিলাম, গেটে গাড়ি অপেক্ষা করছিল, শুধু তুমি একবার হ্যাঁ বললেই আজকে তোমার জীবনটা অন্যরকম হতে পারতো। আর তখনই কারিনার বোধোদয় ঘটে, মণ্ডপ থেকে তিনি পালান আমিরের দুই বন্ধুর সাথে। কখনও কি প্রশ্ন করেছেন বা মাথায় প্রশ্ন এসেছে কিনা- সিনেমা তিনজন মেইন ক্যারেকটার যেখানে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত শেষমেশ নিজেরাই নিয়ে ফেলে অনেক ঝড় ঝঞ্চার পরে, সেখানে কারিনাকে কেন আমিরের দুই বন্ধুর অনেক বুঝানোর পরে নিজের মনের কথা বুঝতে হয়? সিনেমাতে দেখানো একজন সফল ডক্টরের ক্যারেক্টারে অভিনয় করেও কারিনা কেন নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারেনি? মেয়েরা কি তারমানে সবসময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে? আর ভুগলেও সেটা কি সব মেয়ের ক্ষেত্রে সত্যি কিনা? কারিনা যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতো, তাহলে সিনেমাটা যেই পরিমাণ আলোচিত হয়েছে, সেই পরিমাণ আলোচিত বা সেই পরিমাণ ব্যবসাসফল হত কিনা? নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়া, নিজের মতো লাইফ লিড করা একটি সিনেমা কিন্তু কারিনার আছে- হিরোইন। সেই সিনেমা থ্রি ইডিয়টস এর মতো এত আলোচিত না, এতটা ব্যবসাসফলও না। তারমানে কি এই দাঁড়ায় পুরুষশাসিত সমাজে মেয়েদের নিজের মতো চলা বা নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়া জিনিসটা আমরা এখনও সেইভাবে মেনে নিতে পারিনা পর্দায় আর বাস্তব দুই জায়গাতেই?
২- “হাম একবার জিতে হ্যায়, একবার মারতে হ্যায়, শাদি ভি একবার হোতি হ্যায় অউর পেয়ার ভি একহিবার হোতা হ্যায়” – শাহরুখ খানের অন্যতম আলোচিত আর ব্যবসাসফল সিনেমা “কুচ কুচ হোতা হ্যায়” এর খুব আবেগি সংলাপ এটি। যারা হিন্দি বুঝেন না, তাদর জন্য অনুবাদ করে দিচ্ছি- আমরা একবার বাঁচি, একবার মরি, বিয়েও একবার হয় আর প্রেমও একবার হয় আমাদের। এই সিনেমাতে কাজল, শাহরুখ আর রানী কলেজে পড়া তিন বন্ধু থাকে। কলেজে পড়ার সময় শাহরুখ আর কাজল ভাল বন্ধু থাকলেও, শাহরুখ এর সাথে প্রেম আর বিয়ে করেন রানী। যদিও শাহরুখ কে মনে মনে পছন্দ করতেন কাজল। বিয়ের পরে নিজের বাচ্চা জন্ম দেয়ার পর মারা যান রানী। সিনেমার শেষে দেখা যায়- কাজলের সাথে বিয়ে হচ্ছে শাহরুখ এর। দর্শক হিসেবে আপনি কি কখনও প্রশ্ন করেছেন কিনা, এই যে সারা ছবিতে শাহরুখ খান একবার বেঁচে থাকা, একবার মরে যাওয়া, একবার প্রেম আর একবার বিয়ের কথা বলল- সেই শাহরুখ খান কেন তাহলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করলো? তাহলে তার এই সংলাপের গুরুত্ব কি? নিজের একমাত্র সন্তানে “অঞ্জলির” দিকে তাকিয়ে শাহরুখ বিয়ে করেছেন, সন্তানের তো একটা মা লাগে- এইটা হয়ত আপনি বলতে পারেন। কিন্তু উল্টোটা হলেও কি আপনি এই কথা বলতেন? ধরুন কুচ কুচ হোতা হ্যাঁয় যদি এরকম হত- সিনেমাতে এক নায়ক আর দুই নায়িকার বদলে- এক নায়িকা আর দুই নায়ক থাকতো- অর্থাৎ শাহরুখ এর জায়গায় যদি কাজল থাকতো। ব্যর্থ প্রেমিকের রোল যদি সালমান খান প্লে করতো? বিয়ের পরে যদি শাহরুখ যদি মারা যেত আর সিনেমার শেষে যদি কাজল পুরনো প্রেম অর্থাৎ সালমানকে বিয়ে করতো- তাহলে এই সিনেমা যেই পরিমাণ আলোচিত আর যেই পরিমাণে ব্যবসাসফল- সেটি হত কিনা? হইলেও আপনি মেনে নিতে পারতেন কিনা বা সিনেমাটা এখন যেই পরিমাণে ভাল লাগে সেই পরিমাণে ভাল লাগতো কিনা? বিয়ের পরে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়ে করা, বা নিজের জৈবিক চাহিদের দিকে নিজর দেয়া- সেটা কি শুধু পুরুষ বা শাহরুখ খানের ক্ষেত্রেই জায়েজ কিনা? মেয়েরা এরকম কিছু করলেই কেন আমাদের এত হৈচৈ? নাকি আমরা ধরেই নিয়েছি মেয়েদের বা কাজলের জৈবিক চাহিদা বলে কিছু নাই বা মায়েরা একাই পারে সন্তান সামলাতে? সেম কথা আমি যদি সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া বাজিরাও মাস্তানি সিনেমার ক্ষেত্রে বলি- রনবির সিং নিজের বউ থাকা সত্ত্বেও দীপিকার প্রেমে হাবুডুবু খান। দুইজনের সাথেই তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যান- সেটা দেখে আমরা আহা উহু করি(আমি নিজেও করেছি, ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও দিয়েছি) প্রশ্ন হচ্ছে সিনেমার কেন্দ্রীয় ক্যারেক্টারে যদি দীপিকা থাকতেন, আর যদি রনবির কাপুর ও রনবির সিং দুইজন থাকতেন আর দীপিকা যদি দুইজনের সাথেই প্রেম চালিয়ে যেতেন আর সিনেমার বাকি সব ঠিক থাকতো- তাহলে আমরা এই সিনেমার যেই পরিমাণ প্রশংসা করেছি বা দিলওয়ালের সাথে মুক্তি পেয়েও এই সিনেমা যেইরকম ভাল ব্যবসা করেছে, সেরকম করতো কিনা? এই সিনেমার জন্য বেষ্ট ডিরেক্টর হিসেবে সঞ্জয় লীলা ভানশালি বেষ্ট ডিরেক্টর এর ন্যাশনাল ওয়ার্ড (জাতীয় পুরস্কার) পেয়েছেন- সেটা তিনি পেতেন কিনা? অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে ন্যাশনাল বা ন্যাশন বা দেশ বুঝাতে আমরা কিন্তু “মা” না নারীবাচক শব্দ ব্যবহার করি, পুরুষবাচক শব্দ না, যদিও সিনেমাতে আমরা পুরুষের অধিকারটাই বেশি দেখি বা আমাদের দেখানো হয় 😉 সেম প্রশ্ন তোলা যায় “কিস কিস কো পেয়ার কারু” সিনেমার ক্ষেত্রে। সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র কপিল শর্মা(বিখ্যাত ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান) যখন একসাথে চারজন মেয়ের সাথে প্রেম ও বিয়ে করেন আর সেটার কমেডি দেখে আমরা যেভাবে বিনোদিত হই,একই কাজ একইভাবে যদি ভারতি(ইন্ডিয়ার বিখ্যাত মহিলা কমেডিয়ান)করতেন কোন সিনেমাতে, তাহলে আমরা এভাবে বিনোদিত হতাম কিনা? নাকি ভারতির চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতাম কিনা? না তুললে কেন? চরিত্র জিনিসটা ঠিক রাখার দায়িত্ব শুধু মেয়েদেরই কিনা? এই ধারণাটাও কি সিনেমা ঠিক করে দিচ্ছে কিনা?
৩- দুই খানকে নিয়ে কথা বললাম, আমাদের দাবাং ভাইজান বাদ যাবেন কেন? সালমানের ওয়ান্টেড সিনেমাটা আমাদের প্রায় সবার দেখা আছে। সালমানের কামব্যাক সিনেমা বলা হয় এটাকে। এই সিনেমাতে একটা সংলাপ আছে যেখানে সালমান তার সাথের বন্ধু (খাস বাংলায় বললে ‘চ্যালা’) কে বলছেন- তুই যদি মেয়ের পিছনে ভাগিস, তাহলে মেয়ে পয়সার পিছনের ভাগবে। আর তুই যদি পয়সার পিছনে ভাগিস, তাহলে মেয়ে তোর পিছনে ভাগবে। সিনেমাটা আমি যখন প্রথম দেখি, তখন সেটি ছিল হল প্রিন্টে দেখা। এই সংলাপ বলার সাথে সাথে হলে তুমুল তালি আর শিসের আওয়াজ শুনা যায়। সালমান খান mass লেভেলে তুমুল জনপ্রিয় একজন নায়ক- সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই। তার সিনেমার সিংহভাগ দর্শক থাকেন mass people বা আমরা যদি বাংলাতে বলি- খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ আর ট্যাক্সি চালায় যারা, তারা। এখন সালমানের এই সংলাপ যদি তারা সিরিয়াসলি নিয়ে নেয় আর যদি সেই অনুযায়ী আচরণ করে, যদি তারা ম্নেনেই নেই যে জীবনে টাকা কামাইতে পারলেই মেয়েরা আমার পাশে ঘুরঘুর করবে- তাহলে সেটার দোষ কার ঘাড়ে চাপবে? শুধুই কি সালমান খানের ঘাড়ে? নাকি সিনেমার স্ক্রিপ্ট বা সংলাপ জিনিস লিখেছেন তার ঘাড়ে? নাকি পরিচালকের ঘাড়ে? নাকি সেই সিনেমার সাথে জড়িত লোকজনের কাঁধে, যাদের সিনেমা থেকে ওয়ান্টেড সিনেমাটি রিমেক করা হয়েছে? সালমানের এই কথাটা কিছু ক্ষেত্রে সত্যি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু মেয়ে মানেই কি পয়সার পিছনে ঘুরে? সালমান খান না হয়ে যদি সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র কোন মেয়ে করতো- ধরি তার নাম সালমা খান- আর সে যদি বলতো- পুরুষ মানেই মেয়েদের শরীর দেখে, শরীর ছাড়া মেয়েদের আর কোন জিনিসের মূল্য তাদের কাছে নাই- তাহলে যেই পরিমাণ তালি আর শিসের আওয়াজ আমি শুনেছিলাম হল প্রিন্টে, সেটা শুনতাম কিনা? বা সেই সিনেমাটা ওয়ান্টেড এর মতো এত ব্যবসাসফল বা আলোচিত হত কিনা? তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে- এই যে মেয়ে মানেই পয়সার পিছনে ঘুরে আর ছেলে মানেই মেয়েদের শরীর নিয়ে গবেষণা করে- এই জিনিসটা আমরা এত সহজে বিশ্বাস করে নিচ্ছি কিনা? কথাটা সবার ক্ষেত্রেই কি সত্যি? যদি সত্যি না হয়, তাহলে আমরা কেন প্রশ্ন করিনা? নাকি সিনেমা আমাদের প্রশ্ন করার ক্ষমতা থামিয়ে দিচ্ছে?
৪- Omar সিনেমাটা দেখা আছে? ২০১৩ সালের মুক্তি পাওয়া এবং কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জুরি পুরস্কার পাওয়া ফিলিস্তিনের সিনেমা এটি। সিনেমার মূল বিষয়ে বা মূল বক্তব্যে আমি যাব না, আমি একটি বিশেষ দৃশ্যের কথা বলতে চাই। সিনেমাতে আমরা দেখি, ওমর নামের ছেলেটি তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে West Bank barrier(ইজরাইল আর ফিলিস্তিনকে যেই দেয়াল দিয়ে ভাগ করা হয়েছে) নামের দেয়াল টপকে দেয়ালের ওইপাশে তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে যায়। দেখা করতে গিয়ে তাদের মাঝে কিছু প্রেমালাপ হয়। সেখানে তারা বলে- বিয়ের পর কোথায় তারা যাবে হানিমুনে? মেয়েটা সাজেস্ট করে বাংলাদেশে, তখন ওমর বলে- এমনেই ঐ দেশে অনেক সমস্যা, কোন দরকার নাই ঐ দেশে যাওয়ার। অর্থাৎ এই সিনেমার রাইটার বা ডিরেক্টরের কাছে বাংলাদেশ মানেই সমস্যার দেশ। ফাইন, মেনে নিলার তর্কের খাতিরে। এরপরে মেয়েটা জিজ্ঞেস করে- হানিমুনে প্যারিস গেলে কেমন হয়? ওমর উৎসাহী হয় আর ফ্রান্স বা প্যারিসের বেশ প্রশংসা করে- বেশ। এবার একটু অন্যদিকে তাকাই, আমরা জানি গতবছর ফ্রান্সে বেশ বড়সড় একটা বোমা হামলা হয়, যেই ঘটনার পরে আমরা ফেসবুকে নিজেদের প্রোফাইল পিকচার ফ্রান্সের পতাকা দিয়ে রেখেছিলাম প্রতিবাদ হিসেবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ওমর সিনেমাতে যেভাবে হানিমুনের কথোপকথনের সময় ফ্রান্সের প্রশংসা করা হয়, সিনেমাটা যদি ২০১৩ তে মুক্তি না পেয়ে ২০১৬ তে মুক্তি পেত অর্থাৎ ফ্রান্সে বোমা হামলার পর, তাহলে সিনেমাতে ফ্রান্সের পরিবেশ বিয়ে এত ভাল কথা থাকতো কিনা? নাকি তখন বেটার অপশন হিসেবে নায়ক ওমর বাংলাদেশকেই বেছে নিতেন হানিমুনের জায়গা হিসেবে? পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের পাশে হানিমুন উদযাপন করা কি তখন তাদের কাছে ফ্রান্সের চেয়েও বড় “সমস্যা” মনে হত? 😉
৫- বাংলা সিনেমাতে আমরা ছোটবেলা থেকেই একটি কমন সিন দেখতে পাই, নায়িকা যেকোনো ধরনের বিপদে পড়লেই নায়ক কোথা থেকে এসে জানি হাজির হয়ে যায়, এরপরে যথারীতি নায়কের শক্তি প্রদর্শন, ভিলেনের পলায়ন আর লজ্জিত ভঙ্গিতে নায়িকার সেই পুরনো সংলাপ- ভাগ্যিস আজ আপনি সময়মত এসেছিলেন! আজকে আপনি না থাকলে যে কি হত! আচ্ছা, যদি কখনও উল্টোটা হত? আমরা কি সেই প্রশ্নটা করি যে উল্টোটা হলে কি হত? আমরা কি তখন সেটাকে মেনে নিতাম? বিপদ তো যে কারো ক্ষেত্রেই আসতে পারে- ছেলে মেয়ে বা নায়ক নায়িকা নির্বিশেষে। এরকম একটা সিন আমরা দেখি ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া হিন্দি সিনেমা ‘ওয়েলকাম’ এ। নায়িকা ক্যাটরিনা আগুনের মাঝে আটকা পড়েন, অক্ষয় কুমার তাকে বাঁচাতে এসে তার রুপে মুগ্ধ হয়ে সব ভুলে যান, আগুন অক্ষয়ের শরীরে লাগে। কিছুক্ষণ পর দেখা যায় ক্যাটরিনা অক্ষয়কে কাঁধে করে বেরিয়ে আসছেন আর বাইরে থাকা উৎসুক জনগণ সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে বা হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। দর্শক হিসেবে আমরাও হাসি। তারমানে কি সিনেমা আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে- ছেলেরাই মেয়েদেরকে বাঁচাবে, মেয়েরা যদি কখনও ছেলেদের বিপদ থেকে বাঁচায়, তাহলে সেটি হাস্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করে? আচ্ছা, হিন্দি সিনেমা মানেই কি এরকম? হিন্দি সিনেমা মানেও কি বিপদে পড়লে নায়ক নায়িকাকে উদ্ধার করবে বাংলা সিনেমার মতই? বেশিরভাগ সিনেমার ক্ষেত্রে কথাটা সত্য হলেও- সব সিনেমার ক্ষেত্রে না। প্রমাণ? দিচ্ছি, ১৯৯৪ সালে মেহুল কুমার পরিচালিত সিনেমা Krantiveer এ আমরা উল্টো একটি দৃশ্য দেখি যেটি তখনকার সময়ের তুলনায় যথেষ্ট অ্যাডভান্স বলা যায়। সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন নানা পাটেকর আর ডিম্পল কাবাডিয়া। সিনেমার একটি দৃশ্যে দেখা যায় বস্তিতে একজন বিধবা নারীর উপরে অত্যাচার করা হয় আর সেই অত্যাচার থামাতে যখন নানাকে অনুরোধ করা হয়, তখন তিনি হাসতে থাকেন- সে কি আকাশ বাতাস কাঁপানো, গা জ্বলানো হাসি! তখন সেই বিধবা নারী দুঃখের সাথে বলেন- যেই দেশে একজন নারীর দুঃখ দেখে অন্যরা সাহায্য করার পরিবর্তে মজা নেয়, সেই দেশে বেঁচে থাকার চেয়ে মেয়েদের বেশ্যা হওয়া ভাল। জাস্ট এই সংলাপটা বলার পরপরই নানা পাটেকর ধমকে বলেন- আরে চুপ কর, চুপ কর! লজ্জা তো তোর করা উচিত! আজকে বাঁচাব, কালকে কে আসবে? উপরওয়ালা হাত দিসে, সেটা দিয়া তুই ভাত খাস আর সেটা ছড়িয়ে বলিস- বাঁচাও! বাঁচাও! ক্যান? এই হাত দিয়া প্রতিবাদ করতে পারিস না? মেয়েরা নিজেদের অসহায়ত্বের কারণে কখনও বেশ্যাগিরি করে না, মেয়ের বেশ্যাগিরি করে এই কারণে যে- কারণ মেয়েরা লড়াই করতে চায় না সাধারণত। (সংলাপগুলো লেখার সময় আমার নিজেরই রক্ত গরম হয়ে উঠেছে এখন, এতটাই দারুণ ডায়লগ ডেলিভারি ছিল নানার!) জাস্ট এই কথাগুলো বলার পরে, সেই বিধবার মহিলার মাঝে কি যেন অদৃশ্য এক শক্তি এসে ভর করল! যেই দুইজন পুরুষ তাকে অত্যাচার করছিল, তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে পাশে থাকা একটি লাঠি তুলে নিয়ে মহিলার সে কি বেদম মার!- আহা! দেখার মতো আর মনে রাখার মতো এক দৃশ্য। প্রশ্ন হল, ওয়েলকাম ঐ বিশেষ সিন নিয়ে যেই পরিমাণ মাতামাতি হয়, ক্রান্তিবীরের এই সিন নিয়ে তেমন মাতামাতি হয়না। এমনকি অনেকে হয়ত এই সিনেমার নামই জানেন না।
৬- সবাইকে নিয়ে কথা বললাম, ২০০ বছর যারা শাসন করে গেল, তাদেরকে নিয়ে কথা না বললে আমার তো বেঁচে থাকাই বৃথা! 😉
ক) দুনিয়া দখল করতে চায় ভিলেন। বাধা হয়ে দাঁড়ান নায়ক। একসময় নায়িকাকে ধরে নিয়ে যান ভিলেন, সাথে নায়কও ধরা পড়েন। নায়ককে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দেন যেই পার্শ্বনায়িকা, যিনি একসময় ভিলেনের দলে ছিলেন। একসময় ভিলেনের হাত থেকে নিজে মুক্ত করেন নায়ক। একসময় নায়িকার সাতে রাষ্ট্রপ্রধানকে জিম্মি করেন ভিলেন। অবশেষে নায়ক রাষ্ট্রপ্রধান আর নায়িকাকে মুক্ত করেন, ভিলেন মারা যান। এরপরে তারা সুখে শান্তিতে…
খ) দত্তক নেয়া সন্তানদের প্রতি ভালোবাসা স্বরূপ খারাপ কাজ ছেড়ে দেন একসময়ের বিরাট সন্ত্রাসী থাকা নায়ক। এমন সময় একদিন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি রাসায়নিক পদার্থ চুরি হয়।পুলিশের পক্ষ থেকে তখন সেই নায়ককে দায়িত্ব দেয়া হয় এই জিনিস খুঁজে বের করার। এই কাজে নায়কের সঙ্গী হন নায়িকা। তারা কাজ করতে গিয়ে প্রেমে পড়েন আর এক পর্যায়ে রাসায়নিক পদার্থ চুরি করা সেই সন্ত্রাসীকে। খবর পেয়ে নায়িকাকে বন্দি করে ফেলেছেন ভিলেন ততক্ষণে। এরপরে নায়কের একশন শুরু, ভিলেনের একশন শেষ, আবার সেই এরপরে তারা…
গ) একদল সন্ত্রাসীর গল্প। খারাপ কাজ ছেড়ে এবার তারা ভাল রাস্তায় আসতে চায়। রাষ্ট্র তাদের ক্ষমা করতে রাজিও হয় তবে তার বিনিময়ে তাদের অন্য এক সন্ত্রাসীকে খতম করতে হবে। শুরু হয় খেলা। শেষমেশ জয়ী হয় “ভাল”রাই। তিনটি সিনেমার মূল কাহিনী বললাম। বাংলা বা হিন্দি সিনেমার গল্পের মতো শুনালেও, এগুলো কিন্তু বাংলা বা হিন্দি সিনেমার গল্প না। এগুলো সেই ইন্ডাস্ট্রির সিনেমার গল্প যাদের সিনেমা দেখার জন্য ২০১২ তে প্রায় ১৩৭ কোটি মানুষ ১ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি খরচ করেছে। আর নেট থেকে ডাউনলোড করে আর এরকম আরও উপায়ে এই সিনেমা দেখেছে পৃথিবীর মোট সিনেমার দর্শকের তিন ভাগের এক ভাগ। হলিউড এর সিনেমা এগুলো। তিনটি কাহিনী যথাক্রমে- আয়রন ম্যান থ্রি, ডেসপিকেবল মি ২ আর ফাস্ট অ্যান্ড দ্যা ফিউরিয়াস সিক্স এর। এই তিনটি কাহিনী নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নাই, হাজারবার আমরা এই জিনিস দেখেছি, এরপরেও আমরা দেখছি বা অন্য ভাষায় বললে “খাচ্ছি”। কিন্তু এই ধরনের কাহিনী দেখানোর পেছনে উদ্দেশ্য কি সেটা কি কখনও প্রশ্ন করেছি কিনা? কমার্শিয়াল সিনেমা সাধারণত পরিচালক এমন ফর্মুলায় বানান যাতে দর্শক সেই সিনেমা “খায়”,এই তিনটি সিনেমা যেই পরিমাণে ব্যবসা করেছে, তাতে মনে হয় দর্শক শুধু খায়নি, গিলেছে, তার সাথে আঙ্গুল ও চেটেছে! একটু খেয়াল করে দেখবেন- এই তিনটি সিনেমার মূল বক্তব্যে কিন্তু তেমন কোন পার্থক্য নেই। মোটা দাগে বললে- আমেরিকার সাধারণ জনগণ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতে পারে- যেই হামলা দেশী বা বিদেশী- উভয় তরফ থেকেই হতে পারে। আর এই ধরনের হামলা ঠেকাতে মার্কিন প্রশাসন সদা তৎপর! এই কারণে তারা যেই ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করেছে তার নমুনা দেখা যায় আয়রন ম্যান থ্রিতে। “বিপদ” ঠেকাতে “লৌহমানব” তৈরি- এই ধরনের প্রকল্পের উদাহরণ। বিগত কয়েকবছরের আমেরিকার ডাটাবেজ যদি একটু খেয়াল করে দেখেন, তাহলে দেখবেন যে সামরিক খাতে ট্যাক্সের পরিমাণ বেড়েছে, আর সাধারণ মানুষ সেই ট্যাক্স দিচ্ছেও। এই ধরনের সিনেমা কি তারমানে আমাদের অবচেতন মনে বা সাবকন্সাস মাইন্ডে আশঙ্কা সৃষ্টি করে যে ভবিষ্যতে বড় কোন ধরনের ঝামেলা হতে পারে, আর সেই ঝামেলা থেকে আমাদের রক্ষা করবে আমাদের প্রশাসন সুতরাং দক্ষ প্রশাসন বাহিনী তৈরিতে আমার ট্যাক্সের টাকা যত ইচ্ছা নেক- আমার আপত্তি নাই? আমাদেরকে যুদ্ধবাজ করে তোলার সাথে সাথে এই ধরনের কাজ কি আমাদের মানসিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করছে না? আমরা কি এই ধরনের সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রশ্ন করেছি কখনও নাকি তারা যা দেখাচ্ছেন সেটা বিনা দ্বিধায় মেনে নিচ্ছি?
৭- হলিউড সিনেমাতে প্রায়ই দেখানো হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুনিয়া বিশেষ করে “আমেরিকা” শেষ। নায়ক বা নায়িকা কোনোমতে বেঁচে পালাচ্ছেন। প্রকৃতির ক্ষতি করতে করতে আমরা এমন অবস্থা করেছি যেন এই ধরনের দুর্যোগ সামনের দিনে ঘটবেই- একদম যাকে বলে অবশ্যম্ভাবী! আচ্ছা, এমন কি কখনও হতে পারে যে নিকট ভবিষ্যতে আমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে পরিবেশের উন্নতির জন্য একসাথে কাজ করা শুরু করেছি? শুনতে অবাক লাগতে পারে, কিন্তু অসম্ভব তো কিছুনা তাইনা? এমনও তো হতে পারে, নিজেদের ভুল বুঝতে পারে আমরা যেই জায়গায় সমানে বনভূমি উজাড় করেছি, সেই জায়গায় গাছ দিয়ে ভর্তি করে ফেললাম? যদি এমন হতে পারে (পরিমাণে কম হলেও), তাহলে সেই জিনিসটা আমরা হলিউড সিনেমাতে কেন দেখিনা? নাকি আমাদের দেখানো হয়না? সবসময় কেন এটাই দেখানো হয় যে- সামনে দুনিয়াতে সব ধ্বংস হয়ে যাবে? এবার আপনাকে ইন্টারেস্টিং একটা তথ্য দেই- চাঁদে বাস করার শখ তো আমাদের অনেকদিনের। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন আর কয়েক বছরের মাঝেই আমাদের এই শখ পূরণ হবে। আপনি কি জানেন, গত কয়েক বছরে চাঁদে জমি কেনার পরিমাণ অনেক বেড়েছে? জি হ্যাঁ, বিশ্বের অনেক ধনকুবের (বিশেষ করে আমেরিকার) ইতিমধ্যেই চাঁদে জায়গা জমি কিনে রেখেছেন- এই জমি কিনে রাখাটা যতটা মনে হয় বিলাসের তার চেয়ে বেশি সম্ভবত নিরাপত্তার(যদি সত্যিই পৃথিবীতে সামনে কোন ধরনের দুর্যোগ ঘটে তাইলে সোজা চান্দে…) । ইতিমধ্যেই অনেক কোম্পানি হাজার হাজার ডলার কামাই করে ফেলেছে চাঁদের জমি এই ধনকুবেরদের কাছে বিক্রি করে। পুঁজিবাদ জিনিসটা আশা করি এবার বুঝবেন এই ঘটনার মাধ্যমে 😉 আর এর পিছনে কাজ করছে সাবকন্সাস মাইন্ডে থাকা সেই সিনেমা।
লেখার শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। শেষ করার আগে একটি উদাহরণ- তিনি মুসাফির। খাস বাংলাতে বললে পর্যটক বলা যায়। এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়াতে তিনি পছন্দ করেন। ইবনে বতুতাকে নিজের আইডল মনে করেন। মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছে, দুনিয়ার সমস্ত দেশ ভ্রমণ করে এরপরে তিনি মরতে চান। অনেক পরিশ্রম করতে পারেন তিনি। দেহের গড়ন চমৎকার তার। শারীরিক উচ্চতা মাশাল্লাহ লেভেলের। ছোট ছোট চোখ তার, তবে সেই চোখে গভীর অন্তর্ভেদী দৃষ্টি।
এই পর্যটকের নাম ফাতেমা। পুরো নাম- কানিজ ফাতেমা খাতুন।
এবার আপনাকে প্রশ্ন- পর্যটকের নাম বলার আগ পর্যন্ত আপনি কি একবারের জন্য হলেও ভেবেছিলেন- আমি কোন মহিলা পর্যটকের কথা বলছি? মনে হয়না- কারণ আমাদের মাথায় আইডিয়া সেট হয়ে আছে যে পর্যটক মানেই পুরুষ একজন হবেন।
ছোটবেলা থেকেই আমাদের মাথায় সব সেট করে দেয়া হয়- আমাদেরকে বলা হয় গ্লাসে পানি খেতে হয়, কিন্তু পানি বাটিতে করে খেলেও কিন্তু প্রবলেম নাই- কারণ আলটিমেটলি সেটা আপনার পেটেই যাবে, অন্য কোথাও না। সিনেমার ক্ষেত্রেও তেমনই, আমাদের মাথায় যেসব আইডিয়া সেট করে দেয়া আছে, সেগুলাই আমরা দেখি বা সেগুলাই আমাদেরকে দেখানো হয়। ভিন্ন কিছু দেখলেই শুরুতেই আমাদের ধাক্কা লাগে- কারণ আমরা সেই ধরনের জিনিস মেনে নিতে প্রস্তুত না। আবার যখন মেনে নেই কোনোভাবে- তখন কেও যদি আবার নতুন কিছু নিয়ে আসে- তখন সেটাকে আবার মানতে পারি না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমরা প্রশ্ন করিনা। সম্ভবত এই কারণেই সবসময় নায়ক নায়িকার মিল না দেখিয়ে যখন কাহিনীর প্রয়োজনে দুইজনই মৃত্যুবরণ করেন, তখন সেই সিনেমা ফ্লপ হয়- দিল সে। আবার নায়িকা বিষপান করে মৃত্যুবরণ করেন, আর নায়ক সেই শোকে আবার পাগলাগারদে ফেরত যান, সুস্থ থাকার পয়রেও, সেই সিনেমা সাদরে গৃহীত হয়- তেরে নাম। এভাবে সিনেমা দেখতে গেলে তো সিনেমার মজাই আর পাব না-ধুর মিয়া!-আমি বলছি না আপনাকে এভাবেই সিনেমা দেখতে হবে। আমি নিজেও কিন্তু এভাবে দেখি না। এই লেখার উদ্দেশ্য নিজেকে আঁতেল প্রমাণ করা না। আমি খুবই সাধারণ একজন দর্শক মাত্র। ১ থেকে ৭ নাম্বারে যেসব সিনেমা আছে, সেগুলো সবগুলোই আমি এঞ্জয় করি। ১,২,৩ এর সংলাপ তো বেশিরভাগই মুখস্ত বলা যায়! আমার কথা জাস্ট একটাই, আমরা যেন সিনেমা নিয়ে একটু হলেও চিন্তা করি। চিন্তাটা যে আমার মতই বা এভাবেই করতে হবে তা নয়- সেটা অন্য যেকোনোভাবেই করা যায়। চিন্তা করাটা ব্যাপার, প্রশ্ন করাটা ব্যাপার। এরপর থেকে যেকোনো সিনেমা দেখার পরে, বা সিনেমার যেকোনো দৃশ্য দেখার পরে আপনি বা আপনারা যদি “আরে, এটা তো সিনেমা! সিনেমা আর বাস্তব এক নাকি! সিনেমা তো শুধুই এন্টারটেইনমেন্ট!” বলার আগে একটু হলেও চিন্তা করেন, তাহলে আমার এই লেখা সার্থক। সিনেমা শুধু সিনেমা না, সিনেমা শুধু এন্টারটেইনমেন্ট ও না, এগুলোর খোলসে সিনেমা আসলে… থাক! সিনেমা কি সেটার সংজ্ঞা নির্ধারণ করার আমি কে? 😉
হ্যাপি সিনেমা ওয়াচিং!
লিখেছেনঃ Syed Nazmus Sakib
Request Movies and Series